• ডাঃ লালা সৌরভ দাস,কনসালটেন্ট এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, এখন থেকে সিলেটের সোবহানীঘাটে ওয়েসিস হাসপাতালে ছুটির দিন বাদে বিকেল ৫টা - ৮টা রোগী দেখবেন।

  • শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন

    মানবদেহের সংক্রামক রোগসমূহ আমাদের দেহে প্রবেশ করে অপরিষ্কার পরিবেশে জীবনযাপনের জন্য। এমনকি সংক্রামক নয় এমন রোগসমূহও প্রবল আকার ধারন করে এমন পরিবেশে। তাই নিজের, পরিবারের এবং সমাজের সবার নিরাপত্তার স্বার্থে পরিষ্কার পরিছন্নতায় গুরুত্ব দিন।

  • শাঁকসবজি সহ পুষ্টিকর সুষম খাদ্যতালিকা মেনে খাবার গ্রহন করুন

    ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের চর্বি বৃদ্ধি, দেহের ওজন বৃদ্ধি, ক্যান্সার সহ নানা সমস্যার সমাধান দিতে পারে সুষম খাদ্যতালিকা মেনে পরিমিত পরিমানে খাবার গ্রহনের অভ্যাসটি। এরই সাথে নিয়মিত ব্যায়াম, শারীরিক পরিশ্রম এবং পর্যাপ্ত ঘুম অত্যাবশ্যক।

  • বাসায় নিয়মিত ডায়াবেটিস পরিমাপের গুরুত্ব

    ডায়াবেটিস রোগীর নিজের রক্তের সুগার নিজে পরিমাপের গুরুত্ব অপরিসীম। একজন ডায়াবেটিস রোগী নিজের রক্তের সুগার মেনে নিজেই বুঝতে পারেন তা নিয়ন্ত্রনের মাঝে আছে কিনা এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমে যাওয়া) নির্ণয় করে তা প্রতিরোধ করতে পারেন।

  • 1st BES-MAYO Advance Course in Endocrinology in Bangladesh

    The mid of 2018 brings an exciting news for Bangladeshi Endocrinologists. Mayo Clinic, a nonprofit academic medical center based in Rochester, Minnesota, focused on integrated clinical practice, education, and research and also world's number one Endocrine center is going to arrange a "Advance Course in Endocrinology" in collaboration with Bangladesh Endocrine Society on 24th-25th January, 2019

চিকিৎসকদের অনলাইন জার্নাল এবং ইন্টারনেট বেইসড লার্নিংঃ প্রয়োজন সচেতনতা

২০২৫ সাল। চেম্বারে বসে রোগী দেখছেন। এরমাঝে হটাৎ করে দুই/তিনদিন আগে চিকিৎসা নিয়ে যাওয়া কোন রোগীর ছেলে এসে আপনার প্রেসক্রিপশন নিয়ে হাজির। সাথে আরো কিছু ডকুমেন্ট, নতুন কিছু মেডিকেল ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন। তার কথা, “ডাক্তার সাহেব, আপনি আমার মায়ের যে চিকিৎসা দিলেন, ইন্টারনেট ঘেঁটেতো দেখলাম, সম্প্রতি সেই চিকিৎসা পদ্ধতি পাল্টে গেছে!” তখন আপনার প্রতিক্রিয়া কি হবে?


আজকের দিনের জন্য চিন্তাটা কল্পনাপ্রসূত হলেও, নিকট ভবিষ্যতেই এরকম ঘটনা সত্য হতে যাচ্ছে। ইন্টারনেট সহ তথ্য যোগাযোগ মাধ্যমের অবারিত বিকাশের কারনে রোগীদের সচেতনতা বাড়ছে নিজেদের সমস্যার ব্যাপারে। ডাক্তারের চেম্বারে আসার আগে বা পরে সমস্যা নিয়ে গুগোল সার্চ দিয়ে নেয়া রোগীর পরিমান কম নয়। ইন্টারনেটেও রোগীদেরকে লক্ষ্য করে মেডিকেল তথ্য সংযুক্ত সাইটের অভাব নেই। এর মধ্যে সিংহভাগ সাইট মানসম্মত তথ্য প্রদান না করলেও, কিছু সাইট রোগীদেরকে বাস্তবসম্মত তথ্য প্রদান করে। এছাড়া শিক্ষিত সমাজের মাঝে ডাক্তারদের বাইরেও অনেকে এখন মেডিকেল রিসার্চ, লিটারেচার সম্পর্কে অনেক ভালভাবেই খোজ খবর রাখতে জানে, যেখানে কিনা বরং আমরা ডাক্তাররাই অনেকখানি পিছিয়ে আছি। সম্প্রতি অনেকের দ্বারে ঘুরে আসা ইনফারটিলিটির সমস্যায় ভোগান্তিতে থাকা কাপলের সাথে কথা বলে এই ধারনা আরো শক্ত হল, যে চাহিদা মানুষকে কতোখানি জ্ঞানপিপাসু করে তুলে। অদূর ভবিষ্যতে তাই আপনাকে মা কিংবা বাবার চিকিৎসা নিয়ে একটু জেনে/পড়ে শিক্ষিত হয়ে প্রশ্ন করতে আসা ছেলেমেয়ের সংখ্যা কম হবে না। তাদের হাতের ডকুমেন্ট যখন ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত লেটেস্ট আপডেটেড গাইডলাইনের আদলে হবে, তখন “Do not confuse my medical degree with google search” কথাটি বলে পার পেয়ে যাওয়া এত সহজ হয়তো হবে না।




এই কথাগুলো বলার পিছনের উদ্দেশে আসি এখন। আমাদের ডাক্তার সমাজের ইন্টারনেট ব্যবহার এখনো গুটিকয়েক সামাজিক ওয়েবসাইটে সীমাবদ্ধ। নিজেদের মেডিকেল নলেজ এবং প্রতিদিন আপডেট হতে থাকা চিকিৎসা পদ্ধতির সম্পর্কে অস্পষ্ট ধারনাটা পরিবরতন করে নেয়ার জন্য ইফেক্টিভ ভাবে ইন্টারনেট বেইসড জার্নাল, এভিডেন্স বেইসড মেডিসিন এবং গাইডলাইন এসবের সংস্পর্শে আসা থেকে আমরা এখনো অনেকে পিছিয়ে আছি। পাঠ্যবইের বিকল্প নেই, তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। আজকে পৃথিবীতে ঠিক এই মুহূর্তে যে সূর্যের আলো দেখতে পাচ্ছেন, তা সত্যিকার অর্থে আট মিনিট বিশ সেকেন্ড পূর্বের সূর্যের আলো! সূর্য পৃথিবীর নিকটবর্তী তাঁরা হওয়ার পরেও তাঁর আলো যেখানে সময়ের কাছে পিছিয়ে যাচ্ছে, সেখানে দূরের তাঁরার কতটুকু পিছিয়ে আছে কল্পনা করে নিন। আমাদের বইপুস্তকের সীমাবদ্ধতা এখানেই, যে বর্তমানে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে বইপুস্তক গুলোর নীতিমালা ঘনঘন এডিসন পাল্টেও প্রায়শই পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়া কোন বইই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠে না ক্রমাগত বাড়তে থাকা তথ্য উপাত্তের ভিড়ে, রোগের নির্ণয় ভাল করে দিতে গিয়ে প্রায়শই চিকিৎসার অংশে পাতার টান পড়ে যায় প্রকাশকের। রোগীর চিকিৎসা একটু ভাল করে করতে গেলে মনের মাঝে যেসব প্রশ্ন আসে, বই পুস্তকের পাতায় তার উত্তর মাঝেমাঝে খুজেই পাওয়া যায়না।


মেডিকেল নলেজ এবং এভিডেন্স বেইস মেডিসিনের ঘাটতির সীমাবদ্ধতার আরেকটা বড় কারন আমাদের দেশে রিসার্চের অভাব (উদ্যোগ, দিক নির্দেশনার অভাব, রিসার্চ ফান্ডের ঘাটতি) এবং এর কারনে লোকাল এভিডেন্স বেইস গাইডলাইনের অভাব। স্বল্পকিছু ব্যতিক্রম বাদ দিয়ে আমাদের চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো আমেরিকা/ইউরোপের গাইডলাইন ভিত্তিক। লোকাল কমিউনিটিতে এসব গাইডলাইন পদ্ধতি আদর্শ ভাবে অনুকরন করা সম্ভব হয়ে উঠে না। গাইডলাইন দেশের চিকিৎসকরা যখন নিজেদের আদলে পরিবর্তন করে ক্লিনিকাল ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন, তার ফলাফলে রোগী কতটুকু আর্থিক খরচে কতটুকু শারীরিক উন্নতি লাভ করে সেটিও সঠিক ভাবে রেকর্ড করা হয়ে উঠে না। তাই, চিকিৎসায় অসঙ্গতি নিয়ে শিক্ষিত মানুষ যদি অদূর ভবিষ্যতে প্রশ্ন তুলে, সত্যিকার অর্থেই ঠোঁটের আগায় জবাব দেয়ার মত উত্তর খুজে পাবেন না।


কিভাবে এসব সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে উঠা সম্ভব? এই প্রশ্নের অভিমত দিতে পারবেন জ্ঞানীগুণী শিক্ষকরা। শুধুমাত্র কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি, যা হয়তো ক্লিনিকাল লাইনের চিকিৎসক / ট্রেইনিদের কিছুটা উপকারে আসবে।


আমার অনাহারি ডিপ্লোমা ট্রেনিং পিরিয়ডে অর্জনগুলোর মাঝে অন্যতম হল এভিডেন্স বেইস মেডিসিনের সাথে পরিচিত হওয়া। সহজ বাংলায় একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝাই। আজ আপনার ওয়াইফ/বোন এর প্রেগম্নেন্সিতে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ধরা পড়লো রুটিন চেক-আপের সময়। আপনি ডাক্তার, আপনার মনে অনেক প্রশ্ন। মেটফরমিন নাকি ইন্সুলিন, কোনটা মা এবং বাচ্চার জন্য সেইফ? এই প্রশ্নের সমাধান কথায় পাবেন? একেক বইতে একেক অপিনিয়ন। কোন স্যারের কথা শুনবেন? Trust but verify নাকি হাই রিস্ক দেখে verify then trust? কোন সিদ্ধান্ত সব চাইতে সঠিক? কোনটা সব চেয়ে বৃহৎ সংখ্যক রোগীদেরকে নিয়ে ট্রায়াল করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে? ক্লিনিকাল ট্রায়ালে মা এবং বাচ্চার কমপ্লিকেসন সমুহ শুধু জন্মের পর কি শুধু ছোট সময়ের জন্য দেখেই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে? বড় সময়ে সম্ভাব্য কমপ্লিকেসন নিয়ে কোথায় কোন নিশ্চয়তা দেয়া হয়ে উঠেনি? – রোগীর চিকিৎসা খুবই সহজ, যখন রোগীকে পর ভাবা যায়। কিন্তু রোগী যখন আপন মানুষ জন হয়ে উঠে তখনই টান পড়ে নিজের জ্ঞানের ঝুলিতে। এসব অনিশ্চয়তার ঘাটতি যতটুকু পারা যায় তা পূরণের জন্যই এভিডেন্স বেইস মেডিসিনের প্রয়োজন। প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকা রিসার্চের আলোকে সর্বশেষ তথ্য নিয়েই এর কাজ। তারপর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য হিউম্যান ফ্যাক্টর হিসাবে আপনি চিকিৎসকতো আছেন!


বারডেমে কোর্স চলাকালীন সময়ে নিউরোলজি বিভাগে প্লেসমেন্টের সময় শ্রদ্ধেয় প্রফেসর ডাঃ বিকাশ ভৌমিক স্যারের মুখে সর্বপ্রথম “আপ-টু-ডেট (www.uptodate.com)” এর নাম শুনি। স্যার কোম্পানিকে ধরে বেঁধে পুরো বিভাগের জন্য আপ-টু-ডেট এক্সেসের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এতটাকা দিয়ে একটা সাবস্ক্রিপ্সন, তখনো এর গুরুত্ব অনুভব করা হয়ে উঠে নাই। পরবর্তীতে এন্ডোক্রাইন বিভাগে প্লেসমেন্টের সময় একজন সিনিয়ের কাছ থেকে জানতে পারি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় “গ্লোবাল হেলথ ডেলিভারি” নামের একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে অনুন্নত দেশ সমুহে কর্মরত নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া অনুসারে কিছু ডাক্তারদের মাঝে আপ-টু-ডেট সাবস্ক্রিপ্সন প্রভাইড করে থাকে। সেটা থাকায় এপ্লাই করি। সাবস্ক্রিপ্সন পেয়েও যাই অল্প কিছুদিন পরে।


অল্প কিছুদিনের মাঝেই অনুধাবন করি, বই পুস্তকের স্ট্যান্ডার্ড কেয়ারের সাথে এখানে কতখানি পার্থক্য। ইন্টার্ন পিরিয়ডে মেডিসিন সাবজেক্টটা অনেকটাই আনসেটিস্ফায়িং মনে হতো, এর কারন ছিল চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে স্যারদের ভিন্ন ভিন্ন মতামত, ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, সর্বোপরি রোগীর অনেক সমস্যার সমাধান অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়া। এভিডেন্স বেইস মেডিসিনের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমেই অনুধাবন করতে সম্ভব হলাম, একটু চাইলেই এসব অনেক প্রশ্নের ভিন্ন ভিন্ন উত্তরের মাঝে কোনটি সবচাইতে সঠিক আর বর্তমানে গ্রহনযোগ্য সেটা খুজে বের করা অসম্ভব কিছু নয়, বরং নিজের চিকিৎসা পদ্ধতিকে যুগোপযোগী করে নিতে এর বিকল্প নেই।


আপ-টু-ডেট ছাড়াও শতশত মেডিকেল ওয়েবসাইট (যেমনঃ মেডস্কেপ, ড্যাইনামেড ইত্যাদি), মেডিকেল জার্নাল, রেফারেন্স সাইট এখন ক্রমাগত এভিডেন্সস বেইস মেডিসিনের তথ্য প্রদান করে যাচ্ছে। কিছু সাইটের এক্সেস ওপেন, আবার কিছু সাইট পেইড। মেডিকেল লাইফের যে যত আগে এই পদ্ধতিকে নিজের জন্য আপন করে নিবেন, ভবিষ্যতে সেই হবে সব থেকে সুযোগ্য চিকিৎসক। গতানুগতিক ধারার বাইরে বের না হলে সময়ের সাথে সাথে নিজেই পিছিয়ে পড়তে হবে। তথ্য প্রযুক্তির সময়ে নিজেকে এর উপকারী দিক থেকে বিরত রাখা মানে নিজেরই বিপর্যয় ডেকে আনা।
সবার উপকার হয় এমন কিছু এভিডেন্স বেইসড সাইট (EVM) এবং সহজে জার্নাল এক্সেন্স করতে পারবেন এরকম সাইট শেয়ার করছি।


১) আপটুডেটঃ ওয়েবসাইটঃ www.uptodate.com আমার দৃষ্টিতে অন্যতম এভিডেন্স বেইসড সাইট। উন্নত বিশ্বের অনেক মেডিকেল ইন্সিটিউটে ট্রেইনি রেসিডেন্ট এবং চিকিৎসকের জন্য এটি নিজেরাই খরচ বহন করে দিয়ে থাকে। আমাদের দেশে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই সুযোগ অপ্রতুল এবং এর সাবস্ক্রিপন ফি যথেষ্ট বেশি। কোর্সের রেসিডেন্ট দেখালে খরচ একটু কম পড়ে, তাও তা অনেক বেশি অনেকের জন্যই।


তাহলে কিভাবে এক্সেস করবেন?


ফ্রিঃ গ্লোবাল-হেলথ ডেলিভারি প্রজেক্ট নিয়ন্ত্রিত ভাবে অনুন্নত দেশের চিকিৎসকের মাঝে কিছু ফ্রি সাবস্ক্রিপ্সন বিতরন করে থাকে। নিচের লিঙ্কে এর বিস্তারিত পাবেন, এবং ক্রাইটেরিয়া ফিল করলে এপ্লাই করতে পারবেন।
লিঙ্কঃ https://www.globalhealthdelivery.org/uptodate/apply


পেইডঃ অনেকেই উপরের ক্রাইটেরিয়ার বাইরে পড়ে যাবেন। সেই ক্ষেত্রে পেইড সাবস্ক্রিপ্সনের বিকল্প নেই। কিছু আন্তর্জাতিক ড্রাগ/ফার্মা কোম্পানি এডুকেশন পারপাসের অংশ হিসাবে পেইড সাবস্ক্রিপ্স্ন ডাক্তারদের অথবা নির্দিষ্ট বিভাগে প্রভাইড করে থাকে। এছাড়া লাইব্রেরীতে যোগাযোগ করে অথবা নিজেরা মিলে সেটার ব্যবস্থা করে নিতে পারেন।


২) মেডস্কেপঃ (ওয়েবঃ medscape.com ) ফ্রিতে এই সাইট মেডিকেল ইনফরমেশনের একটি বেস্ট অপশন। তাদের CME এর পার্ট হিসাবে বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সরে নিজেরাই ওয়েব-CME আয়োজন করে থাকে, যা বিশেষ ভাবে হেল্পফুল।


৩) জার্নাল সার্চ ইঞ্জিন : https://www.readbyqxmd.com (এন্ডরয়েড এপঃ Read By QxMD)
এই সাইট/ এপটি মেডিকেলের যেকোনো টপিকের উপর অনেকগুলো জার্নাল সাইট ঘেঁটে রেসাল্ট প্রদান করে। এন্ড্রয়েন্ডে অনেক সময় জার্নাল এই এপের ভিতর থেকেই ডাউনলোড করে নেয়া যায় ফ্রি একসেস জার্নাল হলে।


৪) সাই-হাবঃ (ওয়েবঃ Sci-hub.tw ) বিজ্ঞান এবং ইনফরমেশন কখনো টাকার জন্য সীমাবদ্ধ গণ্ডির মধ্যে আটকা পড়ে থাকবে না, এই Motto নিয়ে একজন হ্যাকারের ওয়েবসাইট এটি। এতে প্রায় সকল পেইড জার্নালের পাব-মেড আইডি অথবা DOI লিঙ্ক দিয়ে সার্চ দিলে জার্নালের ফুল ভার্সন চলে আসে। যদিও বিষয়টি লিগ্যাল দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ, তবুও আমাদের দেশের মতো জায়গায় এটি হল মেডিকেল জার্নালের নীলক্ষেত।


৫) বাংলাদেশ জার্নাল অনলাইনঃ (ওয়েবঃ https://www.banglajol.info ) বাংলাদেশের ১৪২টি সায়ান্টিফিক জার্নাল নিয়ে আমাদের আছে, বাংলাজল। অনেকগুলো মেডিকেল কলেজ, মেডিসিন সোসাইটি, বিএসএমএমইউ এর জার্নালের অনলাইন পিডিএফ কপি সহজেই পাবেন এইখানে।


লিস্ট আর বড় করছি না। এর কারন, যারা আগ্রহী তাঁরা নিজে থেকেই একের পর এক আপডেট থাকার ওয়েবসাইট সময়ে সময়ে আবিষ্কার করে যাবেন। হয়তো একসময় উন্নত দেশের মতো মেডিকেল এডুকেসনে বই এর পাশাপাশি এসব জার্নাল পড়া এবং শেয়ারিং করার প্রবণতা একসময় বাড়বে। কিন্তু, এতোদিনে যেটুকু আমরা পিছিয়ে গেছি, তার ঘাটতি পুরন করার সময় এখনই।
Share:

এন্ড্রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সিঃ প্রয়োজন স্টেরয়েড ব্যবহারে চিকিৎসক এবং জনসাধারনের সচেতনতা

“স্যার, শরীরটা খুব দুর্বল লাগে। মাথা ঘুরায় মাঝে মাঝে, বমি বমি ভাব। খাবার একদমই রুচি নাই। প্রেসার প্রায়ই কমে যায়। হাটতে গেলে মনে হয় পড়ে যাবো।”


নারীপুরুষ নির্বিশেষে এরকম Non-Specific শারীরিক লক্ষন নিয়ে রোগীরা আসে সকল শ্রেণীর ডাক্তারদের কাছেই। আমরা সবাই রোগীর হিস্ট্রির বিস্তারিত জানতে চাই, ড্রাগ হিস্ট্রি নেয়া হয়, ফিজিকাল এক্সামিনেসন করি, কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার উপদেশ দেই। অনেকসময় নির্দিষ্ট কারন ধরা পড়ে, যেমনঃ রক্তশূন্যতা, কখনো ইলেক্ট্রলাইট ইম্বেলেন্স ইত্যাদি। আবার অনেক সময় কোন নির্দিষ্ট কারন খুজে পাওয়া যায়না প্রাথমিক পরীক্ষাসমূহে। এইসব রোগীরা কিছু কাউন্সিলিং, কিছু ভিটামিন আর এঞ্জিওলাইটিক ড্রাগ নিয়ে বিদেয় হয় চিকিৎসকদের কাছ থেকে। অনেকের আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় ঘুরতে থাকে, চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে।



Figure: Abdominal Stria
একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এধরনের রোগীদের একাংশের চেহারা অনেকটা গোলগাল, কারো কারো আবার সরু হাত পায়ের সাথে পেটের দিকে এসে অনেকখানি চর্বি। অনেকে হিস্ট্রি দেয় কবিরাজি ঔষধ খেয়ে এসেছে দীর্ঘদিন ধরে। কেউ আবার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের ভক্ত। কিছু রোগী আবার ফার্মেসীর দোকানদারের পরামর্শে বাত বা শ্বাসকষ্ট বা ওজন বাড়ানোর নানা চিকিৎসা ইতঃপূর্বে গ্রহন করে এসেছে বহুদিন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার এমবিবিএস বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সল্পদিনের ওষুধ নিজের ইচ্ছে অনুসারে দীর্ঘদিন খাবার হিস্ট্রি পাওয়া যায়। শারীরিক পরীক্ষার মাঝে কিছু রোগীর পেটের চামড়ার মাঝে খুজে পাওয়া যায় লাল-গোলাপি ছোপ, হাত পায়ের দুর্বলতা মাসল ওয়াস্টিং। ল্যাবের বেইজ লাইন ইনভেস্টিগেসনে পাওয়া যায় ইলিক্ট্রলাইট ইম্বালান্স, যেমনঃ হাইপোনেট্রিমিয়া।


হা, “এন্ড্রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সি এবং ড্রাগ ইনডিউসড কুশিং সিনড্রোম” নিয়ে কথা বলছি। আমাদের দেশে এমবিবিএস ডাক্তার বাদে বাকি সবাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ হয়ে যাওয়াতে এই ধরনের রোগীর সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। এই রোগীদের অথবা তাদের এন্টেন্ডেন্টদের প্রকৃত ডাক্তারের প্রতি এক ধরনের অনাসক্তি/বিরক্তি কাজ করে। তাই গুরুত্বপূর্ণ হিস্ট্রি গোপন করা থেকে শুরু করে ইনভেস্টিগেশনে অনাগ্রহ এধরনের সীমাবদ্ধতা সম্মুখীন হতে হয় চিকিৎসকদের। একইসাথে রোগীর non-specific শারীরিক লক্ষন, অভারট কুশিং সিনড্রোমের মতো চেহারার হুবহু সাদৃশ্য না থাকা এসব সীমাবদ্ধতায় থেকে “এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি” ডায়াগনোসিস করার মতো উপযুক্ত ল্যাব সাপোর্ট, ঔষধ এবং এই রোগের ব্যাপারে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবও এখনো রয়ে গেছে। এইধরনের রোগীগুলোর তাই ভোগান্তির দিনের পর দিন চলতেই থাকে, অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন শারীরিক দুর্বলতার পুরোটা দোষ দেয়া হয় মানসিক সমস্যার উপর। কখনো কিছু রোগী ক্রাইসিস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাৎক্ষণিক ভাবে রোগীর ম্যানেজমেন্ট করা হলেও ফাইনাল ডায়াগনোসিসে পৌছতে সক্ষম হয়ে উঠা হয় না বেশিরভাগ কেসেই।


এক নজরে যদি সীমাবদ্ধতাগুলো দেখি, তাহলে নিজেদেরকে দিয়েই শুরু করতে হয়। এইধরনের রোগী সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি আছে আমাদের অনেকেরই। আমাদের মাঝে অনেকেই, এমনকি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকেই স্টেরয়েড ঔষধ প্রেস্রক্রাইব করার সময় রোগীকে এর অপকারিতা সম্পর্ক সচেতন করে তুলেন না। স্টেরয়েড ম্যাজিকাল ড্রাগ, দেয়া মাত্রই রোগী ভালো। এই ড্রাগগুলো যখন প্রপার কাউন্সিলিং ছাড়া শুরু করে বন্ধ করা হয়, তখন রোগীর শারীরিক উন্নতি সাময়িকভাবে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে দ্রুত শারীরিক সমস্যার সমাধানের আশায় রোগী ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ক্রমাগত স্টেরয়েড গ্রহন করতে থাকেন। ডাক্তারদের অনেকেও জেনে কিংবা না জেনে স্টেরয়েড পুনঃপুন অথবা দিনের একাধিকবার ব্যবহার করে থাকেন। অনেকগুলো স্টেরয়েড দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে, প্রাইমারি ইন্ডিকেসন যদি ব্যাথা থাকে সেই ক্ষেত্রে হয়ত দিনের এক বেলা ঔষধটি প্রেস্রক্রাইব করাই যথেষ্ট ছিল। সেখানে দিনের সকালের সাথে রাতের বেলাও ভাগ করে স্টেরয়েড প্রেস্রক্রাইব করে শরীরের Hypothalamo-pituitary-adrenal Axis কে অধিকতর সাপ্রেস করে রোগীকে এড্রেনাল ইন্সাফিসিয়ন্সির দিকে এগিয়ে দেয়ার দায়ভার আমরা এড়াতে পারি না। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলা, যে বইপত্রে স্টেরয়েড ঔষধপত্র ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে সতর্কতার সাথে স্টেরয়েড প্রেস্ক্রাইব করার পরেও অনেক রোগী সম্পূর্ণ বা পারসিয়াল এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সিতে পড়ে যায়, যার কারন হিসাবে অনেকসময় কোন কোন স্টেরয়েডের দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং রোগীর শারীরিক অবস্থাকে ধরা হয়।


ডায়াগনস্টিক ল্যাবগুলোর হরমোনাল ইনভেস্টিগেশনের আরো খারাপ অবস্থা। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে যারা থাকেন, একটি সামান্য থাইরয়েড ফাংশন টেস্টের রিপোর্ট দেখে অনেক সময় মিলানো যায় না, আর এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি ডায়াগনোসিস করার জন্য “Basal Cortisol” এবং “Synacthin Test” করার চেষ্টাতো দুরাশা। Synacthin Test এর জন্য Inj. Synecthin এর অতিরিক্ত দাম এবং ঘাটতি এই বিভাগে কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করি। সবশেষে কোয়াক প্র্যাকটিস এবং গ্রামেগঞ্জে স্টেরয়েডের অবাধ ব্যবহার এই সমস্যার সমাধানের পথের অন্যতম অন্তরায়।


একজন সহানুভূতিশীল কলিগের পরামর্শে এই পোস্টটি দেয়ার উদ্দেশ্য একটাই। আমরা চিকিৎসকরা যেন স্টেরয়েড ড্রাগগুলো খানিকটা সচেতনতার সাথে ব্যবহার করি এবং এর সুফলের সাথে কুফল নিয়ে রোগীদের আরেকটু সচেতন করি। যে রোগীর প্রয়োজন তার জন্য স্টেরয়েড অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহার যেন সংক্ষিপ্ত হয়, রোগীকে যেন এই ড্রাগ সম্পর্কে কাউন্সিলিং করা হয় এবং ব্যবহারের সময় রাতের বেলা স্টেরয়েড প্রেস্ক্রাইব করা থেকে পারতপক্ষে বিরত থাকি। কবিরাজি এবং হোমিওপাথিক ট্রিটমেন্টে আগ্রহী রোগীদের সহজবোধ্য ভাষায় কাউন্সিলিং করে এসবের সম্ভাব্য কুফল সম্পর্কে অবগত করার চেষ্টা করি। Non-specific Symptomes নিয়ে আসা রোগীদের কথা এবং ড্রাগ হিস্ট্রির ব্যাপারে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখি এবং সন্দেহ হলে এই ধরনের রোগীদের Non-Specific ট্রিটমেন্ট না দিয়ে প্রয়োজনে এই বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে কিভাবে এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি ডায়াগ্নসিস এবং Specific ট্রিটমেন্ট সম্পর্কে রোগীদের অবগত করি।


একজন চিকিৎসা নিতে এসে অন্য রোগের রোগীতে পরিনত হবার মতো করুন পরিনতি যেন বরন না করে, তার প্রতিরোধ আমাদের এই সামান্য সচেতনতাই হতে পারে অন্যতম পদক্ষেপ।
Share:

১৪ই নভেম্বরঃ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

আগামীকাল, ১৪ই নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। 
ডায়াবেটিস নিয়ে রোগীসহ সর্বসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে দিবসটি আন্তর্জাতিক ভাবে পালন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে অসংক্রামক রোগের তালিকায় ডায়াবেটিসের অবস্থান শীর্ষস্থানে। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেসনের পরিসংখানে পৃথিবীর ৪২৫ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। জনসচেতনতা ছাড়া এই রোগের নিয়ন্ত্রন কোন ভাবেই সম্ভব নয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় অনেকগুণ। অল্প বয়েসেই তাই দেখা দেয় হৃদরোগ, স্ট্রোক, চোখের মারাত্মক রেটিনোপ্যাথি, অনুভুতি কমে যাওয়া, পঙ্গুত্ব সহ নানা রোগ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে না রাখলে, দিন দিন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতায় পরে চিকিৎসা ব্যয় বাড়তে থাকে। এতে করে বিঘ্নিত হয় পারিবারিক এবং সামাজিক জীবন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে তাই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান আবশ্যক। 



 ২০১৮ সালের ডায়াবেটিস দিবসের প্রতিপাদ্য “পরিবার এবং ডায়াবেটিস”। সহজ করে বলতে গেলে ডায়াবেটিস শুধু রোগীর রোগ নয়, বরং গোটা পরিবারের রোগ। কিভাবে? 



মনে করা যাক, পরিবারে কোন সদস্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবারে রক্তের সম্পর্ক আছে এমন কারো ডায়াবেটিস থাকলে অন্য সদস্যের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়। মা এবং বাবা এমন কারো ডায়াবেটিস থাকলে সন্তান দের ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি দুই থেকে পাঁচগুণ বেড়ে দাড়ায়। তাই, পরিবারে কারো ডায়াবেটিস আছে, বা ধরা পড়া মানে গোটা পরিবারের জন্য সেটি সতর্ক সংকেত। এমতাবস্থায়, গোটা পরিবারের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর জন্য সঠিক জীবনযাত্রা এবং শারীরিক পরিশ্রম সহ ব্যায়াম ইত্যাদি আবশ্যক হয়ে দাড়ায়। 


আবার, ডায়াবেটিস রোগী পরিবারে থাকাকে খারাপ ভাবে নেবারও কোন কারন নেই। একজন রোগীর কাছে থেকে পরিবারের অন্য সদস্যরা রোগ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠতে পারেন। রোগীর সাথে সাথে সুনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমিয়ে নিয়ে আসতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলেই ডায়াবেটিসের ঝুকিতে আছেন, তাই পরিবারের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত সদস্য গোটা পরিবারের জন্য সচেতনতার নিদর্শন হিসাবে কাজ করেন। সেই সচেতনতা শুধু রুগীকে নয়, বরং গোটা পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে সাহায্য করে।

আবার একথা ভুলে গেলে চলবে না, ডায়াবেটিস রোগীর রোগ নিয়ন্ত্রনে পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হয়। তাই, ডায়াবেটিক রোগী মানে চিকিৎসা এবং সুস্বাস্থ্য শুধু রোগীর নিজের নয়, বরং গোটা পরিবারের। 

তাই, পারিবারিক ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন এবং প্রতিরোধে সচেতন হয়ে উঠুন এবং সচেতনতা অন্যদের মধ্যে পৌঁছে দিতে সহায়তা করুন।
Share:

World Osteoporosis Day (বিশ্ব হাড়ক্ষয় দিবস) ২০১৮

আগামীকাল, ২০শে অক্টোবর পালিত হতে যাচ্ছে World Osteoporosis Day (বিশ্ব হাড়ক্ষয় দিবস)। হাড় দেহের স্বাভাবিক কাঠামো গঠন করে। বিশ্বজুড়ে বিপুল সংখ্যক রোগী Osteoporosis/হাড়ক্ষয় এর কারণে সল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়া, হাঁটাচলার ক্ষমতা হ্রাস সহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগীদের একটি বিশাল অংশ নিজেই জানেন না যে তাঁরা হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যায় আক্রান্ত। বিশেষত বয়স্ক মহিলাদের এই ঝুঁকির পরিমাণ আরো বেশি। এই রোগের জন্য তাই প্রয়োজন সার্বজনীন সচেতনতা। 



হাড়ের ক্ষয় রোধে কিছু নির্দেশনা:

💪 নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং পর্যাপ্ত ব্যায়াম অনুশীলন করা।

🥛 পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করা।

🚭 ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি বর্জন করা।

🚥 শারীরিক কোনো সমস্যা, বয়সের কারণে বা রোগের কারণে হাড় ক্ষয় এর কোনো ঝুঁকি আছে কিনা চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তা নির্ণয় করা।

🛡️ ঝুঁকিতে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে হাড় ক্ষয়কে প্রতিরোধ করা।


☑️ প্রতিপাদ্য তাই: Love your bones, Protect the future 📣
Share:

গর্ভকালীন হাইপোথাইরয়েডিজমঃ থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি

থাইরয়েড মানবদেহের জন্য একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অন্তঃক্ষরা (হরমোন তৈরি করে এমন) গ্রন্থি। এটি থাইরয়েড হরমোন নামক উপাদান রক্তে নিঃসরণ করে থাকে, যা মানব দেহের প্রতিটি কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এই হরমোন যখন স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায় তখন যে সমস্যার উদ্ভব হয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় সেটিকে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিজম।  

এই সমস্যায় ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ, এমনকি বৃদ্ধ কমবেশি সবাই আক্রান্ত হতে পারেন। 



স্বাভাবিক মানুষের হাইপোথাইরয়েডিজম এর লক্ষন সমূহঃ


১) শারীরিক দুর্বলতা,

২) ঠাণ্ডা পরিবেশে অস্বস্তি,

৩) পায়খানা কশা হওয়া,

৪) কাজেকর্মে উৎসাহ কমে যাওয়া,

৫) শরীরের ওজন বৃদ্ধি।

৬) মেয়েদের মাসিকের সাথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ইত্যাদি।




তবে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, মেয়েদের সন্তান ধারনের সময় এই হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্যাটির ঝুকি। এই সময়ে উপরের লক্ষন প্রকাশ না পেয়েও মায়েরা হাইপোথাইরয়েডিজমের ঝুকিতে ভুগতে পারেন। আর এই হাইপোথাইরয়েডিজম থাকলে মেয়েদের গর্ভধারনের সময় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গর্ভপাত ঝুকি অনেকগুন বেড়ে যায়। এমনকি হাইপোথাইরয়েডিজম অজানা থাকলে তা মেয়েদের গর্ভধারনেও বাঁধার সৃষ্টি করে থাকে। এটা জেনে রাখা প্রয়োজন যে গর্ভকালীন সময়ে খুব সামান্য থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতিই মায়ের অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত, বাচ্চার বুদ্ধির বিকাশের সমস্যা সহ নানাবিধি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই সামান্য থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি সঠিক ভাবে নির্ধারণ এবং গর্ভকালীন সময়ে অথবা গর্ভধারনের আগে সঠিক এবং দ্রুত চিকিৎসা করে নিরাপদ গর্ভধারণ করা একান্ত জরুরী। 





গর্ভকালীন হাইপোথাইরয়েডিম বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনাঃ



১) পরিবারে কারো থাইরয়েডের সমস্যা অথবা থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি জনিত  রোগের লক্ষনসমূহ কারো থাকলে তিনি গর্ভধারনের আগেই হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২) যাঁদের হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্যা টি আছে তাঁদের সবাইকে ডাক্তারের পরামর্শে পরিকল্পিত ভাবে গর্ভধারণ করতে হবে। নতুবা গর্ভপাতের ঝুকি অনেক বেড়ে যাবে। এধরনের রোগীর থাইরয়েড হরমোনের ট্যাবলেট নিয়মিত ভাবে গ্রহন করে বাচ্চা নিতে হবে এবং গর্ভধারন নিশ্চিত হওয়া মাত্র ওষুধের মাত্রা -২৫-৩০% বৃদ্ধি করে নিতে হবে।


৩) যাঁদের হাইপোথাইরয়েডিজম সমস্যাটি নেই এমন মায়েদের ক্ষেত্রেও প্রতিটি প্রেগ্ননেন্সির প্রথম তিন মাসের রুটিন চেক আপের সাথে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে থাইরয়েড হরমোনের পরীক্ষা (S. TSH) পরীক্ষাটি করতে হবে। পরীক্ষায় S. TSH: 4.0 mU/L এর বেশি আসলে হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অন্য পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে, নতুবা গর্ভপাতের ঝুকি অনেকগুণ বেড়ে যাবে। এখানে উল্লেখ্য যে, স্বাভাবিক রোগীর নরমাল S. TSH এর মাত্রা গর্ভকালীন সময়ে প্রযোজ্য হবে না। তাই  সঠিক ভাবে রোগ নির্ণয় ও তার সমাধানে এই বিশেষক্ষেত্রে হরমোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কোন বিকল্প নেই।



৪) যেসব মেয়েদের বারবার গর্ভকালীন সময়ে গর্ভপাত হচ্ছে তাঁদেরকেও থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি আছে কিনা তা পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। 

৫) যেসব মায়েদের গর্ভকালীন সময়ে হাইপোথাইরয়েডের সমস্যাটি নতুন করে ধরা পড়েছে, তাঁদের বাচ্চা হবার ৬ সপ্তাহ পরে আবার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে সমস্যাটির সাময়িকভাবে নাকি সারাজীবন চিকিৎসা প্রয়োজন হবে।



সবশেষে, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে থাইরয়েড হরমোনজনিত মাতৃত্বকালীন সমস্যা সম্পর্কে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নিই। তাই আমরা সবাই এই সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করি এবং এটি সম্পর্কে সচেতন হই।
Share:

Announcement: Brand Name Change


Hello...

This is an announcement related to my Brand Name Change. It was previously named as "EndoCare". But most of the people failed to realize the what it stands for.

This is why, I'm going to change it in "Diabetes & Endocrine Health Care, BD" for better self explanatory brand name. Change will be applicable for Facebook page also. Thank you all.

Share:

এক নজরে...



ডাঃ লালা সৌরভ দাস

এমবিবিএস, ডিইএম (বারডেম), বিসিএস (স্বাস্থ্য)

ডায়াবেটিস, থাইরয়েড এবং হরমোন বিশেষজ্ঞ (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট)

সহকারী সার্জন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা

কনসালটেন্ট, ওয়েসিস হাসপাতাল, সিলেট

প্রাক্তন আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন), পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

মেম্বার অফ বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি

মেম্বার অফ আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিকাল এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট



Subscribe

Recommend on Google

Recent Posts