২০৩০,
দৃশ্যপটঃ ঢাকার প্রখ্যাত কোন এক হাসপাতাল। সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধাযুক্ত
আইসোলেশন ওয়ার্ডের কাঁচের ঘরে শুয়ে আছে নিতু, বয়স ৫ বছর। অল্প দূরেই
ওয়েটিং রুমে বসে আছেন নিতুর মা বাবা, অশ্রুসজল চোখে শুধুই দিন গোনার পালা।
এই মাত্র কয়েকটা দিন আগেই দুরন্ত মেয়েটা খেলতে গিয়ে ছোট্ট একটা আঘাত
পেয়েছিল ডান পায়ে। কিছু বোঝার আগেই দুদিনের মাথায় ক্ষতটা ইনফেকশন হয়ে জুড়ে
নেয় পায়ের অনেকখানি জায়গা, সাথে তীব্র জ্বর। ডাক্তার
দেখানো হল, ক্ষত থেকে পুজ নিয়ে ব্যাকটেরিয়া কালচার করা হল। এসেছিল
রিপোর্টে, টোটাল ড্রাগ রেসিস্টেন্ট স্টেপ. ওরিয়াস। ডাক্তারদের কিছু করার
ক্ষমতা অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তবুও শেষচেষ্টা হিসাবে সর্বোচ্চ ক্ষমতার
এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হল। তবুও ধীরে ধীরে নিতুর শরীরের
অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে একে একে...
আকাশচুম্বী ছাদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে নিতুর মা। আকাশে আজ বৃষ্টি নেই, তবু অঝর ধারায় চোখের জল থেমে নেই এই মায়ের। নিতু আর নেই। এই মায়ের খালি হয়ে যাওয়া বুকের মতো গোটা ঢাকা শহর ও আজ অনেক খানি ফাঁকা। শুধু ঢাকা কেন, পুরো দুনিয়ার অনেকটাই ফাঁকা। কেনই বা ফাঁকা হবে না, সাধারণ কলেরা, ব্যাকটেরিয়াল ফিভারে যেখানে পুরো পরিবার উঝাড় হয়ে যায়, শহরের পর শহর হারিয়ে যায়।
হাঁ, পাঠক। খুব বেশী দিন হয়তো নয়, যেদিন আমাদের এই দৃশ্য দেখতে হবে। মুড়িমুড়কির মতো এন্টিবায়োটিক ব্যাবহারের শাস্তি আমাদেরকে না হলেও আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বইতে হবে। খুব বেশী দিন হয়নি, যখন কলেরার কারনে গ্রামের পর গ্রাম ফাঁকা হয়ে যেত, যক্ষ্মা হলে রক্ষা নাই এই অভিশাপ নিয়ে মানুষকে মরতে হতো। এন্টিবায়োটিক এলো, আমরা সুফল ভোগ করতে গিয়ে এমনই এন্টিবায়োটিকের ব্যাবহার শুরু করে দিলাম, যে সাধারণ ভাইরাল ফিভারেও এন্টিবায়োটিক না খেলে মানসম্মান আর থাকে না। সম্প্রতি WHO প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা যায়না এরকম ব্যাকটেরিয়া এখনো পৃথিবীর প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে। দিন দিন এইসব জীবাণু বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন নতুন এন্টিবায়োটিকের বিপরীতে ক্ষমতাশালী হয়ে পুরাতন রোগকে আরও কঠিন নতুন রূপে ছড়িয়ে দিচ্ছে শুধুমাত্র আমাদের অসাবধানতার জন্য।
WHO সাধারণ মানুষের মাঝে শুধুমাত্র ৩টি মেসেজ পৌঁছে দিতে চেয়েছেঃ
১) শুধুমাত্র ডাক্তার (পল্লীচিকিৎসক/ফার্মেসির দোকানদার নয়) এবং কেবলমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক গ্রহন করার।
২) এন্টিবায়োটিক নির্দেশিত সময় জুড়ে সঠিকভাবে খাবার, শুধুমাত্র রোগের তীব্রতা কমে যাওয়া পর্যন্ত নয়।
৩) একজনের জন্য দেয়া এন্টিবায়োটিক, অন্যজনকে না খাবার নির্দেশনা।
এসব কথা আমাদের দেশের জন্য কি সুফল বয়ে আনবে জানি না, আমাদের দেশে এন্টিবায়োটিক কতোখানি সহজলভ্য তা দেখলে হয়তো ওদের চক্ষু চড়কগাছে উঠত। তবুও আমাদের ও সময় এসেছে ভাববার। শুধু সাধারণ মানুষদের নয়, ডাক্তারদের ও। একটা খারাপ রোগের সংস্পর্শে সর্বপ্রথম ডাক্তারই আসবেন। সংক্রামক রোগগুলোকে যদি এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসাই না করা যায়, তবে অদূর ভবিষ্যতে চিকিৎসা দেয়ার মতো কোন ডাক্তার জীবিত থাকবে কিনা ভেবে দেখবেন একটু...
(গল্পের প্রতিটি চরিত্র কাল্পনিক, গল্পের প্রতিটি দৃশ্যপট কাল্পনিক, স্রষ্টা না করুক ভবিষ্যতে এতো খারাপ কিছু কখনো যেন না হয়, শুধু এই অনুভূতিটা বাস্তবিক ভবিষ্যতের জন্য কিছু করার সময় এখনই)
আকাশচুম্বী ছাদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে নিতুর মা। আকাশে আজ বৃষ্টি নেই, তবু অঝর ধারায় চোখের জল থেমে নেই এই মায়ের। নিতু আর নেই। এই মায়ের খালি হয়ে যাওয়া বুকের মতো গোটা ঢাকা শহর ও আজ অনেক খানি ফাঁকা। শুধু ঢাকা কেন, পুরো দুনিয়ার অনেকটাই ফাঁকা। কেনই বা ফাঁকা হবে না, সাধারণ কলেরা, ব্যাকটেরিয়াল ফিভারে যেখানে পুরো পরিবার উঝাড় হয়ে যায়, শহরের পর শহর হারিয়ে যায়।
হাঁ, পাঠক। খুব বেশী দিন হয়তো নয়, যেদিন আমাদের এই দৃশ্য দেখতে হবে। মুড়িমুড়কির মতো এন্টিবায়োটিক ব্যাবহারের শাস্তি আমাদেরকে না হলেও আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বইতে হবে। খুব বেশী দিন হয়নি, যখন কলেরার কারনে গ্রামের পর গ্রাম ফাঁকা হয়ে যেত, যক্ষ্মা হলে রক্ষা নাই এই অভিশাপ নিয়ে মানুষকে মরতে হতো। এন্টিবায়োটিক এলো, আমরা সুফল ভোগ করতে গিয়ে এমনই এন্টিবায়োটিকের ব্যাবহার শুরু করে দিলাম, যে সাধারণ ভাইরাল ফিভারেও এন্টিবায়োটিক না খেলে মানসম্মান আর থাকে না। সম্প্রতি WHO প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা যায়না এরকম ব্যাকটেরিয়া এখনো পৃথিবীর প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে। দিন দিন এইসব জীবাণু বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন নতুন এন্টিবায়োটিকের বিপরীতে ক্ষমতাশালী হয়ে পুরাতন রোগকে আরও কঠিন নতুন রূপে ছড়িয়ে দিচ্ছে শুধুমাত্র আমাদের অসাবধানতার জন্য।
WHO সাধারণ মানুষের মাঝে শুধুমাত্র ৩টি মেসেজ পৌঁছে দিতে চেয়েছেঃ
১) শুধুমাত্র ডাক্তার (পল্লীচিকিৎসক/ফার্মেসির দোকানদার নয়) এবং কেবলমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক গ্রহন করার।
২) এন্টিবায়োটিক নির্দেশিত সময় জুড়ে সঠিকভাবে খাবার, শুধুমাত্র রোগের তীব্রতা কমে যাওয়া পর্যন্ত নয়।
৩) একজনের জন্য দেয়া এন্টিবায়োটিক, অন্যজনকে না খাবার নির্দেশনা।
এসব কথা আমাদের দেশের জন্য কি সুফল বয়ে আনবে জানি না, আমাদের দেশে এন্টিবায়োটিক কতোখানি সহজলভ্য তা দেখলে হয়তো ওদের চক্ষু চড়কগাছে উঠত। তবুও আমাদের ও সময় এসেছে ভাববার। শুধু সাধারণ মানুষদের নয়, ডাক্তারদের ও। একটা খারাপ রোগের সংস্পর্শে সর্বপ্রথম ডাক্তারই আসবেন। সংক্রামক রোগগুলোকে যদি এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসাই না করা যায়, তবে অদূর ভবিষ্যতে চিকিৎসা দেয়ার মতো কোন ডাক্তার জীবিত থাকবে কিনা ভেবে দেখবেন একটু...
(গল্পের প্রতিটি চরিত্র কাল্পনিক, গল্পের প্রতিটি দৃশ্যপট কাল্পনিক, স্রষ্টা না করুক ভবিষ্যতে এতো খারাপ কিছু কখনো যেন না হয়, শুধু এই অনুভূতিটা বাস্তবিক ভবিষ্যতের জন্য কিছু করার সময় এখনই)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন