• ডাঃ লালা সৌরভ দাস,কনসালটেন্ট এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, এখন থেকে সিলেটের সোবহানীঘাটে ওয়েসিস হাসপাতালে ছুটির দিন বাদে বিকেল ৫টা - ৮টা রোগী দেখবেন।

  • শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন

    মানবদেহের সংক্রামক রোগসমূহ আমাদের দেহে প্রবেশ করে অপরিষ্কার পরিবেশে জীবনযাপনের জন্য। এমনকি সংক্রামক নয় এমন রোগসমূহও প্রবল আকার ধারন করে এমন পরিবেশে। তাই নিজের, পরিবারের এবং সমাজের সবার নিরাপত্তার স্বার্থে পরিষ্কার পরিছন্নতায় গুরুত্ব দিন।

  • শাঁকসবজি সহ পুষ্টিকর সুষম খাদ্যতালিকা মেনে খাবার গ্রহন করুন

    ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের চর্বি বৃদ্ধি, দেহের ওজন বৃদ্ধি, ক্যান্সার সহ নানা সমস্যার সমাধান দিতে পারে সুষম খাদ্যতালিকা মেনে পরিমিত পরিমানে খাবার গ্রহনের অভ্যাসটি। এরই সাথে নিয়মিত ব্যায়াম, শারীরিক পরিশ্রম এবং পর্যাপ্ত ঘুম অত্যাবশ্যক।

  • বাসায় নিয়মিত ডায়াবেটিস পরিমাপের গুরুত্ব

    ডায়াবেটিস রোগীর নিজের রক্তের সুগার নিজে পরিমাপের গুরুত্ব অপরিসীম। একজন ডায়াবেটিস রোগী নিজের রক্তের সুগার মেনে নিজেই বুঝতে পারেন তা নিয়ন্ত্রনের মাঝে আছে কিনা এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমে যাওয়া) নির্ণয় করে তা প্রতিরোধ করতে পারেন।

  • 1st BES-MAYO Advance Course in Endocrinology in Bangladesh

    The mid of 2018 brings an exciting news for Bangladeshi Endocrinologists. Mayo Clinic, a nonprofit academic medical center based in Rochester, Minnesota, focused on integrated clinical practice, education, and research and also world's number one Endocrine center is going to arrange a "Advance Course in Endocrinology" in collaboration with Bangladesh Endocrine Society on 24th-25th January, 2019

এন্ড্রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সিঃ প্রয়োজন স্টেরয়েড ব্যবহারে চিকিৎসক এবং জনসাধারনের সচেতনতা

“স্যার, শরীরটা খুব দুর্বল লাগে। মাথা ঘুরায় মাঝে মাঝে, বমি বমি ভাব। খাবার একদমই রুচি নাই। প্রেসার প্রায়ই কমে যায়। হাটতে গেলে মনে হয় পড়ে যাবো।”


নারীপুরুষ নির্বিশেষে এরকম Non-Specific শারীরিক লক্ষন নিয়ে রোগীরা আসে সকল শ্রেণীর ডাক্তারদের কাছেই। আমরা সবাই রোগীর হিস্ট্রির বিস্তারিত জানতে চাই, ড্রাগ হিস্ট্রি নেয়া হয়, ফিজিকাল এক্সামিনেসন করি, কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার উপদেশ দেই। অনেকসময় নির্দিষ্ট কারন ধরা পড়ে, যেমনঃ রক্তশূন্যতা, কখনো ইলেক্ট্রলাইট ইম্বেলেন্স ইত্যাদি। আবার অনেক সময় কোন নির্দিষ্ট কারন খুজে পাওয়া যায়না প্রাথমিক পরীক্ষাসমূহে। এইসব রোগীরা কিছু কাউন্সিলিং, কিছু ভিটামিন আর এঞ্জিওলাইটিক ড্রাগ নিয়ে বিদেয় হয় চিকিৎসকদের কাছ থেকে। অনেকের আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় ঘুরতে থাকে, চিকিৎসকদের দ্বারে দ্বারে।



Figure: Abdominal Stria
একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এধরনের রোগীদের একাংশের চেহারা অনেকটা গোলগাল, কারো কারো আবার সরু হাত পায়ের সাথে পেটের দিকে এসে অনেকখানি চর্বি। অনেকে হিস্ট্রি দেয় কবিরাজি ঔষধ খেয়ে এসেছে দীর্ঘদিন ধরে। কেউ আবার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের ভক্ত। কিছু রোগী আবার ফার্মেসীর দোকানদারের পরামর্শে বাত বা শ্বাসকষ্ট বা ওজন বাড়ানোর নানা চিকিৎসা ইতঃপূর্বে গ্রহন করে এসেছে বহুদিন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার এমবিবিএস বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সল্পদিনের ওষুধ নিজের ইচ্ছে অনুসারে দীর্ঘদিন খাবার হিস্ট্রি পাওয়া যায়। শারীরিক পরীক্ষার মাঝে কিছু রোগীর পেটের চামড়ার মাঝে খুজে পাওয়া যায় লাল-গোলাপি ছোপ, হাত পায়ের দুর্বলতা মাসল ওয়াস্টিং। ল্যাবের বেইজ লাইন ইনভেস্টিগেসনে পাওয়া যায় ইলিক্ট্রলাইট ইম্বালান্স, যেমনঃ হাইপোনেট্রিমিয়া।


হা, “এন্ড্রেনাল ইনসাফিসিয়েন্সি এবং ড্রাগ ইনডিউসড কুশিং সিনড্রোম” নিয়ে কথা বলছি। আমাদের দেশে এমবিবিএস ডাক্তার বাদে বাকি সবাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশেষজ্ঞ হয়ে যাওয়াতে এই ধরনের রোগীর সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। এই রোগীদের অথবা তাদের এন্টেন্ডেন্টদের প্রকৃত ডাক্তারের প্রতি এক ধরনের অনাসক্তি/বিরক্তি কাজ করে। তাই গুরুত্বপূর্ণ হিস্ট্রি গোপন করা থেকে শুরু করে ইনভেস্টিগেশনে অনাগ্রহ এধরনের সীমাবদ্ধতা সম্মুখীন হতে হয় চিকিৎসকদের। একইসাথে রোগীর non-specific শারীরিক লক্ষন, অভারট কুশিং সিনড্রোমের মতো চেহারার হুবহু সাদৃশ্য না থাকা এসব সীমাবদ্ধতায় থেকে “এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি” ডায়াগনোসিস করার মতো উপযুক্ত ল্যাব সাপোর্ট, ঔষধ এবং এই রোগের ব্যাপারে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবও এখনো রয়ে গেছে। এইধরনের রোগীগুলোর তাই ভোগান্তির দিনের পর দিন চলতেই থাকে, অনেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন শারীরিক দুর্বলতার পুরোটা দোষ দেয়া হয় মানসিক সমস্যার উপর। কখনো কিছু রোগী ক্রাইসিস নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাৎক্ষণিক ভাবে রোগীর ম্যানেজমেন্ট করা হলেও ফাইনাল ডায়াগনোসিসে পৌছতে সক্ষম হয়ে উঠা হয় না বেশিরভাগ কেসেই।


এক নজরে যদি সীমাবদ্ধতাগুলো দেখি, তাহলে নিজেদেরকে দিয়েই শুরু করতে হয়। এইধরনের রোগী সম্পর্কে সচেতনতার ঘাটতি আছে আমাদের অনেকেরই। আমাদের মাঝে অনেকেই, এমনকি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকেই স্টেরয়েড ঔষধ প্রেস্রক্রাইব করার সময় রোগীকে এর অপকারিতা সম্পর্ক সচেতন করে তুলেন না। স্টেরয়েড ম্যাজিকাল ড্রাগ, দেয়া মাত্রই রোগী ভালো। এই ড্রাগগুলো যখন প্রপার কাউন্সিলিং ছাড়া শুরু করে বন্ধ করা হয়, তখন রোগীর শারীরিক উন্নতি সাময়িকভাবে কিছুটা স্থবির হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে দ্রুত শারীরিক সমস্যার সমাধানের আশায় রোগী ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই ক্রমাগত স্টেরয়েড গ্রহন করতে থাকেন। ডাক্তারদের অনেকেও জেনে কিংবা না জেনে স্টেরয়েড পুনঃপুন অথবা দিনের একাধিকবার ব্যবহার করে থাকেন। অনেকগুলো স্টেরয়েড দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে, প্রাইমারি ইন্ডিকেসন যদি ব্যাথা থাকে সেই ক্ষেত্রে হয়ত দিনের এক বেলা ঔষধটি প্রেস্রক্রাইব করাই যথেষ্ট ছিল। সেখানে দিনের সকালের সাথে রাতের বেলাও ভাগ করে স্টেরয়েড প্রেস্রক্রাইব করে শরীরের Hypothalamo-pituitary-adrenal Axis কে অধিকতর সাপ্রেস করে রোগীকে এড্রেনাল ইন্সাফিসিয়ন্সির দিকে এগিয়ে দেয়ার দায়ভার আমরা এড়াতে পারি না। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলা, যে বইপত্রে স্টেরয়েড ঔষধপত্র ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে সতর্কতার সাথে স্টেরয়েড প্রেস্ক্রাইব করার পরেও অনেক রোগী সম্পূর্ণ বা পারসিয়াল এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সিতে পড়ে যায়, যার কারন হিসাবে অনেকসময় কোন কোন স্টেরয়েডের দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং রোগীর শারীরিক অবস্থাকে ধরা হয়।


ডায়াগনস্টিক ল্যাবগুলোর হরমোনাল ইনভেস্টিগেশনের আরো খারাপ অবস্থা। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে যারা থাকেন, একটি সামান্য থাইরয়েড ফাংশন টেস্টের রিপোর্ট দেখে অনেক সময় মিলানো যায় না, আর এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি ডায়াগনোসিস করার জন্য “Basal Cortisol” এবং “Synacthin Test” করার চেষ্টাতো দুরাশা। Synacthin Test এর জন্য Inj. Synecthin এর অতিরিক্ত দাম এবং ঘাটতি এই বিভাগে কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করি। সবশেষে কোয়াক প্র্যাকটিস এবং গ্রামেগঞ্জে স্টেরয়েডের অবাধ ব্যবহার এই সমস্যার সমাধানের পথের অন্যতম অন্তরায়।


একজন সহানুভূতিশীল কলিগের পরামর্শে এই পোস্টটি দেয়ার উদ্দেশ্য একটাই। আমরা চিকিৎসকরা যেন স্টেরয়েড ড্রাগগুলো খানিকটা সচেতনতার সাথে ব্যবহার করি এবং এর সুফলের সাথে কুফল নিয়ে রোগীদের আরেকটু সচেতন করি। যে রোগীর প্রয়োজন তার জন্য স্টেরয়েড অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহার যেন সংক্ষিপ্ত হয়, রোগীকে যেন এই ড্রাগ সম্পর্কে কাউন্সিলিং করা হয় এবং ব্যবহারের সময় রাতের বেলা স্টেরয়েড প্রেস্ক্রাইব করা থেকে পারতপক্ষে বিরত থাকি। কবিরাজি এবং হোমিওপাথিক ট্রিটমেন্টে আগ্রহী রোগীদের সহজবোধ্য ভাষায় কাউন্সিলিং করে এসবের সম্ভাব্য কুফল সম্পর্কে অবগত করার চেষ্টা করি। Non-specific Symptomes নিয়ে আসা রোগীদের কথা এবং ড্রাগ হিস্ট্রির ব্যাপারে বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখি এবং সন্দেহ হলে এই ধরনের রোগীদের Non-Specific ট্রিটমেন্ট না দিয়ে প্রয়োজনে এই বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে কিভাবে এন্ড্রেনাল ইন্সাফিসিয়েন্সি ডায়াগ্নসিস এবং Specific ট্রিটমেন্ট সম্পর্কে রোগীদের অবগত করি।


একজন চিকিৎসা নিতে এসে অন্য রোগের রোগীতে পরিনত হবার মতো করুন পরিনতি যেন বরন না করে, তার প্রতিরোধ আমাদের এই সামান্য সচেতনতাই হতে পারে অন্যতম পদক্ষেপ।
Share:

এক নজরে...



ডাঃ লালা সৌরভ দাস

এমবিবিএস, ডিইএম (বারডেম), বিসিএস (স্বাস্থ্য)

ডায়াবেটিস, থাইরয়েড এবং হরমোন বিশেষজ্ঞ (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট)

সহকারী সার্জন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা

কনসালটেন্ট, ওয়েসিস হাসপাতাল, সিলেট

প্রাক্তন আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন), পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

মেম্বার অফ বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি

মেম্বার অফ আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশন অফ ক্লিনিকাল এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট



Subscribe

Recommend on Google

Recent Posts