ডায়াবেটিস কি?
ডায়াবেটিক রোগের লক্ষন কি?
ডায়াবেটিস রোগের আগের ধাপ সমূহে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হলে এবং রোগী পর্যাপ্ত খাদ্যভাস নিয়ন্ত্রন, জীবনযাত্রার পরিবরতন এবং ওজন কমানোর মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগকে প্রতিরোধ অথবা বিলম্বিত করতে প্রায়শই সক্ষম হবেন
ডায়াবেটিস রোগের কি কি প্রকারভেদ?
সকল ধরনের ডায়াবেটিস রোগকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
- আমরা যেসব খাদ্য গ্রহন করি, তা অন্ত্রে পরিপাকের পর শর্করা জাতীয় খাবার থেকে গ্লুকোজ তৈরি হয় এবং তা রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন কোষে স্থানান্তরিত হয়ে শক্তি তৈরিতে সহায়তা করে। রক্তের গ্লুকোজ রক্ত থেকে কোষে স্থানান্তরিত হতে ইনসুলিন নামক একধরনের হরমোন একান্ত প্রয়োজন হয়, যা শরীরের অগ্নাশয়/পেনক্রিয়াস নামক অঙ্গের “বিটা” কোষ থেকে নিঃসরিত হয়ে থাকে।
ডায়াবেটিস হল ইনসুলিনের ঘাটতি অথবা ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার সামগ্রিক পরিস্থিতি। এতে করে রক্তের সুগার শরীরের কোষে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়। রক্তের সুগার প্রতিনিয়ত বাড়তি থাকতে থাকে এবং শরীরের কোষ সমুহের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়।
-
রক্তের সুগার নির্দিষ্ট পরিমান বৃদ্ধি পাবার পর সামগ্রিক পরিস্থিতিকে ডায়াবেটিস হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং রোগীকে ডায়াবেটিক রোগী হিসাবে চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে।
ডায়াবেটিক রোগের লক্ষন কি?
একজন ডায়াবেটিক রোগী বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে ভুগতে পারেনঃ
সুনির্দিষ্ট লক্ষনঃ ১) ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, ২) অতিরিক্ত পানির পিপাসা লাগা, ৩) খুব বেশি ক্ষুধা পাওয়া ৪) যথেষ্ট পরিমানে খাবার পরেও শরীরের ওজন কমে যাওয়া। ৫) ক্লান্তি ও দুর্বলতা বোধ করা।
সুনির্দিষ্ট নয় এমন লক্ষন সমূহঃ ১) ক্ষতস্থান শুকাতে বিলম্ব হওয়া। ২) চোখে কম দেখা। ৩) বারবার চামড়ার সমস্যা জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া। ৪) বার বার প্রসবের সমস্যা বা বাচ্চা নস্ট হয়ে যাওয়া।
মনে রাখবেন, শতকরা ৫০% ডায়াবেটিক রোগীর কোন রকম সমস্যার লক্ষন ছাড়াই ডায়াবেটিস থাকতে পারে, এসব রোগীদের প্রায়শই সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে ডায়াবেটিস ধরা পরে থাকে।
কাদের ডায়াবেটিসের ঝুকি বেশি?
যে কেউ যে কোন বয়সে যে কোন সময় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে নিম্নলিখিত শ্রেণীর লোকের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার ঝুকি বেশি।
-
যাদের পরিবারে, যেমন মা বাবা বা রক্ত সম্পর্কিত নিকট আত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে।
-
যাদের ওজন অনেক বেশি বা পেটের মেদ অনেক বেশি।
-
যারা শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করেন না এবং নিয়মিত ব্যায়াম করেন না।
-
যারা বহুদিন স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ গ্রহন করেন।
-
যারা অধিক পরিমানে শর্করা জাতীয় খাদ্য দীর্ঘদিন ধরে গ্রহন করে আসছেন।
ডায়াবেটিস কি সারানো যায়?
ডায়াবেটিস কি সারানো যায়?
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির এই যুগেও কিছু সংখ্যক বিশেষ ধরনের ডায়াবেটিসকে বাদ দিলে বাকি সকল রোগীর জন্য ডায়াবেটিস সারা জীবনের রোগ। তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহন করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখলে একজন ডায়াবেটিস রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সক্ষম।
ডায়াবেটিক রোগের ধাপ সমূহ কি কি?
স্বাভাবিক অবস্থা > অভুক্ত অবস্থায় গ্লুকোজ আধিক্য। (Impaired Fasting Glucose) > শর্করা অসহিষ্ণুতা (Impaired Glucose Tolerance) > ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিক রোগের ধাপ সমূহ কি কি?
স্বাভাবিক অবস্থা > অভুক্ত অবস্থায় গ্লুকোজ আধিক্য। (Impaired Fasting Glucose) > শর্করা অসহিষ্ণুতা (Impaired Glucose Tolerance) > ডায়াবেটিস
ধাপ
|
অভুক্ত অবস্থায়
|
গ্লুকোজের দুই ঘণ্টা পরে
|
Normal |
< ৬.১ মিমোল/লি |
< ৭.৮ মিমোল/লি |
Impaired Fasting Glucose |
৬.১ – ৬.৯ মিমোল/লি |
< ৭.৮ মিমোল/লি |
Impaired Glucose Tolerance |
< ৭.০ মিমোল/লি |
৭.৮ – ১১.০ মিমোল/লি |
Diabetes |
=/> ৭.০ মিমোল/লি |
এবং/অথবা =/> ১১.১ মিমোল/লি |
ডায়াবেটিস রোগের আগের ধাপ সমূহে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হলে এবং রোগী পর্যাপ্ত খাদ্যভাস নিয়ন্ত্রন, জীবনযাত্রার পরিবরতন এবং ওজন কমানোর মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগকে প্রতিরোধ অথবা বিলম্বিত করতে প্রায়শই সক্ষম হবেন
ডায়াবেটিস রোগের কি কি প্রকারভেদ?
সকল ধরনের ডায়াবেটিস রোগকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ক) ধরন ১
(Type 1) ডায়াবেটিস
খ) ধরন ২ (Type 2) ডায়াবেটিস
গ) বিবিধ কারনভিত্তিক শ্রেণী
ঘ) গর্ভকালীন ডায়াবেটিস