ডায়াবেটিক
রোগীর চিকিৎসাঃ ডায়াবেটিক
রোগীর চিকিৎসার তিনটি স্তম্ভ...
ক) ডায়েটঃ খাদ্যাভ্যাস
নিয়ন্ত্রন।
খ) ডিসিপ্লেইনঃ পরিকল্পিত জীবনযাপন
এবং নিয়মিত ব্যায়াম অনুশীলন।
মনে রাখবেন,
ডায়াবেটিস সারাজীবনের রোগ। এটি নিয়ন্ত্রনে ডাক্তারের ভূমিকার পাশাপাশি রোগীর
ভূমিকা অপরিহার্য। রোগীর নিজের রোগ সম্পর্কে জানতে হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজেকে
দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যথায় ডায়াবেটিক রোগীর রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রন কখনোই
সম্ভব নয়।
শৃঙ্খলাঃ
o
নিয়মিত ও পরিমান মতো সুষম খাবার গ্রহন করতে হবে।
o
নিয়মিত ও পরিমান মতো ব্যায়াম বা দৈহিক পরিশ্রম
করতে হবে।
o
চিকিৎসকের পরামর্শ এবং ব্যবস্থাপত্র সুষ্ঠুভাবে
মেনে চলতে হবে।
o
শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
o
পায়ের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
o
শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের
পরামর্শ নিতে হবে।
o
চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যাতিত কোন কারনেই ডায়াবেটিস
রোগের চিকিৎসা বন্ধ রাখা যাবে না।
o
বাসায় গ্লুকমিটার রেখে নিজের রক্তের সুগার নিজে
পরিমাপ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো।
ডায়াবেটিক
রোগীর খাদ্যগ্রহণের নিয়মাবলিঃ
o
শরীরের
ওজন বাঞ্ছিত ওজনের বেশি থাকলে তা কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা, কম থাকলে তা
বাড়িয়ে স্বাভাবিক করা এবং ওজন স্বাভাবিক থাকলে সেটা বজায় রাখা।
o
চিনি
মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
o
শর্করা
বহুল খাবারগুলো (চাল, আটা দিয়ে তৈরি খাবার, মিষ্টি ফল ইত্যাদি) হিসাব করে খেতে
হবে।
o
আঁশবহুল
খাবার (শাঁক সবজি, টক ফল ইত্যাদি) বেশি করে খেতে হবে।
o
সম্পৃক্ত
ফ্যাট যেমন ঘি, মাখন, চর্বি, ডালডা, মাংস কম করে খেতে হবে। পরিবর্তে অসম্পপ্রিক্ত
ফ্যাট যেমন উদ্ভিদ তেল, অর্থাৎ সয়াবিন তেল, সরিষার তেল এবং সব ধরনের মাছ খাওয়ার
অভ্যাস করতে হবে।
o
নির্দেশিত
খাদ্যতালিকা দেখে শিখে নিতে হবে।
o
সমান
ক্যালরির খাবার রুচি ভেদে পরিবর্তন করে খাওয়া যেতে পারে।
o
নির্দিষ্ট
সময়ে খেতে হবে। কোন বেলার খাবার বাদ দেয়া যাবে না। আজ কম, কাল বেশি এভাবে খাবার
খাওয়া যাবে না
o
অসুস্থ
হলে বিশেষ খাদ্যতালিকা মেনে খাবার গ্রহন করতে হবে।
ব্যায়ামঃ
ডায়াবেটিক
রোগীদের রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যায়াম/ শারীরিক পরিশ্রম একান্ত প্রয়োজন।
যারা কম পরিশ্রমের কাজ করেন, যেমনঃ অফিসের কাজ, ঘরের কাজ ইত্যাদি, তাঁদের সপ্তাহিক ভাবে ১৫০ মিনিট দ্রুত গতির হাটা
অনুশীলন করতে হবে।
নিয়মঃ প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ মিনিট হাটা, হাটার শুরুতে ধীর গতিতে
হাটা শুরু করে ১০ মিনিট ব্যবধানে ধীরে ধীরে গতি বৃদ্ধি করতে হবে। উদ্দেশ থাকবে নাড়ীর
গতি যেন দিগুণ বৃদ্ধি পায়। হাটার শেষে আবার হটাৎ করে থেমে না গিয়ে ধীরে ধীরে গতি
থামিয়ে অনুশীলন শেষ করতে হবে। যাঁদের হৃদরোগ আছে তাঁদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন
করতে হবে। টানা দুই দিন হাটা বাদ দেয়া যাবে না।
ডায়াবেটিসের
ঔষধঃ
খাদ্যাভ্যাস,
ব্যায়াম এবং শৃঙ্খলার পাশাপাশি রোগীদেরকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য ওষুধ গ্রহনের
প্রয়োজনীয়তা প্রায়শই দেখা দেয়। এই ক্ষেত্রে ডায়াবেটিক রোগীর চিকিৎসায় অভিজ্ঞ এমন
চিকিৎসক/এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট একজন রোগীকে উপযুক্ত সহায়তা প্রদান করতে পারেন।
একই সাথে রোগীর
নিজের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের ইচ্ছা এবং প্রচেষ্টা ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য
অপরিহার্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন